গল্পঃ এক টাকার প্রেম, পর্ব-২

পর্ব ২: হৃদয়ের শব্দঃ

শুক্রবার সকাল। রবিনের মনে যেন এক অজানা উত্তেজনা। দোকানের পুরনো বেঞ্চিটাও আজ একটু ভালো করে মুছে রেখেছে। মামুন ভাই বিরক্ত হয়ে বলল, “কী ব্যাপার, আজ সব কিছু এত পরিষ্কার করছিস?”

রবিন কিছু বলল না। সে জানত, আজ নায়লা আসবে।

ঠিক বেলা ১১টা নাগাদ, কালো গাড়িটা আবার সেই চায়ের দোকানের সামনে এসে থামে। আজ নায়লার গায়ে একটা হালকা নীল সালওয়ার কামিজ, চোখে চশমা। আগের চেয়ে আজকে আরও বেশি সাধারণ দেখাচ্ছে তাকে, কিন্তু রবিনের চোখে যেন সে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মেয়ে।

নায়লা নেমেই বলল, “আজ একটু আগে চলে এসেছি, ক্লাস ক্যানসেল।”

রবিন হাসল, “ভালোই হয়েছে।”

নায়লা একটু চুপ করে বলল, “তুমি জানো? তোমার চায়ের স্বাদ আমার জীবনের এক রকম নেশা হয়ে গেছে।”

রবিন চমকে গেল। সে বলল, “আমার চা... মানে, আমি তো খুব সাধারণভাবে বানাই।”

“কিন্তু এতে একটা অদ্ভুত শান্তি আছে,”—নায়লা বলল, “এটা যে শুধু চা নয়, এখানে তোমার মনও মিশে থাকে।”

রবিন প্রথমবার সাহস করে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, “আপনি শুধু চা খেতে আসেন, না কি আমার সঙ্গে কিছু কথা বলার জন্যও?”

নায়লা এবার একটু লাজুক হেসে বলল, “দু’টোই। কিছু কিছু অনুভূতি আছে, যেগুলো কাউকে না বললেও বোঝা যায়... তাই না?”

রবিনের গলা শুকিয়ে গেল। সে কিছু বলতে পারল না।

তাদের চুপিচুপি চোখে চোখে কথা হচ্ছিল। চারপাশে হাজারো শব্দ, অথচ তাদের মাঝে একটাও শব্দ দরকার ছিল না।

তবে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা একজন রিকশাওয়ালা সবকিছু লক্ষ্য করছিল।

দু’দিন পরেই সেই খবর নায়লার বাবা জানতে পারেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সম্মানিত ব্যবসায়ী, এবং এমন "নিচু স্তরের" ছেলের সঙ্গে মেয়ের মেলামেশা তিনি একেবারেই মেনে নিতে পারলেন না।

সেদিন সন্ধ্যায়, নায়লার ফোন বন্ধ হয়ে যায়।

রবিন দোকানে বসে বসে শুধু চায়ের কেটলি থেকে বাষ্প উঠতে দেখে।

নায়লা আসেনি। ফোন বন্ধ। শুক্রবারটা কেমন ফাঁকা হয়ে গেল।

সে বুঝতে পারল—ঝড় আসছে।


পরবর্তী পর্বে:
নায়লা কি আবার আসবে? নাকি এই ভালোবাসার শুরুতেই শেষ?


0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন